Dhaka 6:35 am, Wednesday, 9 July 2025
ব্রেকিং নিউজ :
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে গোয়াইনঘাট মডেল উপজেলায় উন্নীত হবে:এড.মুমিন গোয়াইনঘাটে যৌথবাহিনীর অভিযান নৌপথে চাঁদাবাজির দায়ে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক:৬ গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আনন্দ মিছিল সাংবাদিক বিলালের বিরুদ্ধে অপপ্রচার: গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাব’র নিন্দা সালুটিকর গোয়াইনঘাট রাস্তার বেহাল দশায়:মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে পর্যটকরা ব্যবসায় ধস গোয়াইনঘাটে বিএনপির শোক সভা ও দোয়া মাহফিল সিলেট সীমান্তে বিজিবি’র অভিযানে কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য আটক গোয়াইনঘাটে অটোরিকশা-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত:১ গোয়াইনঘাট-সালুটিকর রোডে ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের গাফিলতিতে সৃষ্টি জনদুর্ভোগ লাঘবে মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি: গোয়াইনঘাটে তথ্য বিভ্রাটকারীদের অপপ্রচারে শিকার সাংবাদিক মনজুর

জাফলংয়ে বালু ও পাথর খেকোদের হাত থেকে চা-বাগান রক্ষায় মানববন্ধন

মতিউর রহমান (দুলাল) গোয়াইনঘাট সিলেট:
সিলেটের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় প্রকল্প ছিল জাফলং সেতু নির্মাণ। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সেতুটি পূর্ণাঙ্গরূপ পেলেও কয়েক বছরের মাথায় ঝুঁকিতে পড়েছে সেই স্বপ্নের জাফলং সেতুটি। যেকোনো মুহূর্তে সেতুটির বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। সেতুর নিচ থেকে অপরিকল্পিতভাবে প্রতিদিন বালু ও পাথর উত্তোলনের ফলে দুটি পিলার পরে সব পিলারের ভূগর্ভস্থ অংশের চারপাশ আলদা হয়ে পড়েছে। সেতুর ওপর হালকা যান চলাচলেও মাত্রাতিরিক্ত ঝাঁকুনির সৃষ্টি হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে রহস্যজনক কারণে পাথর ও বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভারতের মেঘালয় পাহাড় থেকে বয়ে আসা পিয়াইন নদীর জাফলং খেয়াঘাট এলাকায় এলজিডির তত্ত্বাবধানে প্রায় ২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এর লক্ষ্য ছিল জেলা সদরের সঙ্গে গোয়াইনঘাট উপজেলার পর্যটন এলাকা জাফলংয়ের সড়ক যোগাযোগ সহজ ও দূরত্ব কমিয়ে আনা। কিন্তু জাফলংয়ের ডাউকি নদীর পাড়ে চা-বাগান সংলগ্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন রাতের আধাঁরে একটি মহল অবৈধভাবে যান্ত্রিক মেশিন,কিংবা শ্রমিক দিয়ে বালু ও পাথর উত্তোলনের কারণে রোজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এ জনপদের যোগাযোগ মাধ্যম জাফলং সেতু। বালু-পাথর খেকোদের হাত থেকে ঐতিহ্যবাহী জাফলং চা-বাগান রক্ষার দাবিতে রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে ইউনিয়নের সচেতন মহল। উপজেলার ১১নং মধ্য জাফলং ইউনিয়নের সর্বস্থরের নাগরিকদের উদ্যোগে জাফলং ব্রীজে দাঁড়িয়ে কয়েক শতাধিক নারী-পুরুষের উপস্থিতিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় সিলেটের ঐতিহ্য, জাফলং চা-বাগানকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে সর্ব সাধারণের সহযোগীতা চেয়েছেন প্রতিবাদকারীরা। চা শিল্পের ক্ষতিগ্রস্থ মানবো না মানবো না, এরকম বিভিন্ন স্লোগান সংবলিত প্লেকার্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন হাতে নিয়ে কয়েক শতাধিক নারী-পুরুষ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

এ সময় স্থানীয় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও জাফলং চা বাগানে বসবাসরত সর্বস্তরের নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, জাফলং চা বাগান হচ্ছে উত্তর সিলেটের অনন্য এক ঐতিহ্য। একটি কুচক্রীমহল জাফলং নদী থেকে দিনে এবং রাতে বালু উত্তোলন করে চা-বাগানকে ধ্বংস করছে। যার ফলে জাফলং ব্রীজসহ আশপাশের ভূমি ও চা-বাগান ধ্বংসের মুখে দাবিত হচ্ছে। পাথর ও বালু খেকোদের দৌরাত্ম্যে এবং নদী ভাঙনের কবলে ইতিমধ্যে এই চা-বাগানের প্রায় ৩০০ একর ভূমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন অবশিষ্ট যেটুকু রয়েছে সেটুকু রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে একসময় এই চা বাগানের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না। কাজেই বিলীন হয়ে যাওয়ার আগে এই চা বাগান রক্ষায় কার্যকারী পদক্ষেপ না নিলে আমরাও (চা শ্রমিকরা) আমাদের অস্তিত্ব রক্ষায় মিছিল, মিটিং ও মানববন্ধনসহ লাগাতর আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় জাফলং চা বাগানের ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) নাসির উদ্দিন খাঁন’র সভাপতিত্বে ও মধ্য জাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি কামরুল হাসানের সঞ্চালনায় এ সময় বক্তব্য রাখেন, মধ্য জাফলং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাইদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক নূর মোহাম্মদ, ফিল্ড সুপার ভাইজার কপিল উদ্দিন লিটন, মধ্য জাফলং ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম মুছা, সয়েন ব্যানার্জি, রিনি প্রধান, পশ্চিম জাফলং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য কামাল হোসেন, সাবেক ইউপি সদস্য সারবেন মাহালী, যুবদল নেতা ফরিদ, সালেহ আহমদ, নওয়াব আলী, লিয়াকত আহমদ প্রমুখ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে গোয়াইনঘাট মডেল উপজেলায় উন্নীত হবে:এড.মুমিন

জাফলংয়ে বালু ও পাথর খেকোদের হাত থেকে চা-বাগান রক্ষায় মানববন্ধন

Update Time : 03:27:46 pm, Sunday, 15 September 2024

মতিউর রহমান (দুলাল) গোয়াইনঘাট সিলেট:
সিলেটের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় প্রকল্প ছিল জাফলং সেতু নির্মাণ। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সেতুটি পূর্ণাঙ্গরূপ পেলেও কয়েক বছরের মাথায় ঝুঁকিতে পড়েছে সেই স্বপ্নের জাফলং সেতুটি। যেকোনো মুহূর্তে সেতুটির বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। সেতুর নিচ থেকে অপরিকল্পিতভাবে প্রতিদিন বালু ও পাথর উত্তোলনের ফলে দুটি পিলার পরে সব পিলারের ভূগর্ভস্থ অংশের চারপাশ আলদা হয়ে পড়েছে। সেতুর ওপর হালকা যান চলাচলেও মাত্রাতিরিক্ত ঝাঁকুনির সৃষ্টি হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে রহস্যজনক কারণে পাথর ও বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভারতের মেঘালয় পাহাড় থেকে বয়ে আসা পিয়াইন নদীর জাফলং খেয়াঘাট এলাকায় এলজিডির তত্ত্বাবধানে প্রায় ২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এর লক্ষ্য ছিল জেলা সদরের সঙ্গে গোয়াইনঘাট উপজেলার পর্যটন এলাকা জাফলংয়ের সড়ক যোগাযোগ সহজ ও দূরত্ব কমিয়ে আনা। কিন্তু জাফলংয়ের ডাউকি নদীর পাড়ে চা-বাগান সংলগ্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন রাতের আধাঁরে একটি মহল অবৈধভাবে যান্ত্রিক মেশিন,কিংবা শ্রমিক দিয়ে বালু ও পাথর উত্তোলনের কারণে রোজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এ জনপদের যোগাযোগ মাধ্যম জাফলং সেতু। বালু-পাথর খেকোদের হাত থেকে ঐতিহ্যবাহী জাফলং চা-বাগান রক্ষার দাবিতে রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে ইউনিয়নের সচেতন মহল। উপজেলার ১১নং মধ্য জাফলং ইউনিয়নের সর্বস্থরের নাগরিকদের উদ্যোগে জাফলং ব্রীজে দাঁড়িয়ে কয়েক শতাধিক নারী-পুরুষের উপস্থিতিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় সিলেটের ঐতিহ্য, জাফলং চা-বাগানকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে সর্ব সাধারণের সহযোগীতা চেয়েছেন প্রতিবাদকারীরা। চা শিল্পের ক্ষতিগ্রস্থ মানবো না মানবো না, এরকম বিভিন্ন স্লোগান সংবলিত প্লেকার্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন হাতে নিয়ে কয়েক শতাধিক নারী-পুরুষ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

এ সময় স্থানীয় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও জাফলং চা বাগানে বসবাসরত সর্বস্তরের নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, জাফলং চা বাগান হচ্ছে উত্তর সিলেটের অনন্য এক ঐতিহ্য। একটি কুচক্রীমহল জাফলং নদী থেকে দিনে এবং রাতে বালু উত্তোলন করে চা-বাগানকে ধ্বংস করছে। যার ফলে জাফলং ব্রীজসহ আশপাশের ভূমি ও চা-বাগান ধ্বংসের মুখে দাবিত হচ্ছে। পাথর ও বালু খেকোদের দৌরাত্ম্যে এবং নদী ভাঙনের কবলে ইতিমধ্যে এই চা-বাগানের প্রায় ৩০০ একর ভূমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন অবশিষ্ট যেটুকু রয়েছে সেটুকু রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে একসময় এই চা বাগানের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না। কাজেই বিলীন হয়ে যাওয়ার আগে এই চা বাগান রক্ষায় কার্যকারী পদক্ষেপ না নিলে আমরাও (চা শ্রমিকরা) আমাদের অস্তিত্ব রক্ষায় মিছিল, মিটিং ও মানববন্ধনসহ লাগাতর আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় জাফলং চা বাগানের ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) নাসির উদ্দিন খাঁন’র সভাপতিত্বে ও মধ্য জাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি কামরুল হাসানের সঞ্চালনায় এ সময় বক্তব্য রাখেন, মধ্য জাফলং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাইদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক নূর মোহাম্মদ, ফিল্ড সুপার ভাইজার কপিল উদ্দিন লিটন, মধ্য জাফলং ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম মুছা, সয়েন ব্যানার্জি, রিনি প্রধান, পশ্চিম জাফলং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য কামাল হোসেন, সাবেক ইউপি সদস্য সারবেন মাহালী, যুবদল নেতা ফরিদ, সালেহ আহমদ, নওয়াব আলী, লিয়াকত আহমদ প্রমুখ।