Dhaka 3:11 pm, Tuesday, 11 November 2025

৫৮ পাকিস্তানি সেনা হত্যার দাবি আফগানিস্তানের

  • Reporter Name
  • Update Time : 09:31:05 am, Sunday, 12 October 2025
  • 32 Time View

শনিবার রাতভর পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। আফগান কর্মকর্তাদের দাবি, রাজধানী কাবুলসহ দেশটির ভূখণ্ডে পাকিস্তানের বিমান হামলার পাল্টা জবাব দিয়েছে তালেবান বাহিনী। এই হামলায় পাকিস্তানের অন্তত ৫৮ সেনা নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছে।

রবিবার তালেবান সরকারের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ এক এক্স পোস্টে বলেন, আফগান বাহিনী বিপুল পরিমাণ পাকিস্তানি অস্ত্রও দখল করেছে। অভিযানে আফগান তালেবান বাহিনীরও ২০ জনের বেশি সদস্য নিহত বা আহত হয়েছে।

তবে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পাকিস্তান আফগান সরকারের এই দাবির বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।

এর আগে হেলমান্দ প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র মৌলভী মোহাম্মদ কাসিম রিয়াজ গণমাধ্যমকে বলেন, শনিবার রাতে বাহরামপুর জেলার ডুরান্ড লাইনের কাছে আফগান বাহিনীর পাল্টা অভিযানে ১৫ পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছেন। তিনি বলেন, অভিযানে তিনটি পাকিস্তানি সামরিক ফাঁড়ি দখল ও অস্ত্র-গোলাবারুদ জব্দ করেছে আফগান বাহিনী।
আফগানিস্তানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে এপির প্রতিবেদনে বলা হয়, পাল্টা হামলায় এক ডজনেরও বেশি পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে। তবে এ বিষয়ে ইসলামাবাদ এখনও কোনও মন্তব্য করেনি।

গত বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল ও পূর্বাঞ্চলীয় পাকতিকা প্রদেশে পাকিস্তানের বিমান হামলার অভিযোগ তুলে তালেবান সরকার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছিল।

ইসলামাবাদ বিমান হামলার অভিযোগ স্বীকারও করেনি, আবার অস্বীকারও করেনি। তবে কাবুলকে আহ্বান জানিয়েছে ‘পাকিস্তানবিরোধী সন্ত্রাসী সংগঠন’ তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানকে (টিটিপি) আশ্রয় দেওয়া বন্ধ করতে।

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের হামলার জবাবে শনিবার রাতে হেলমান্দ, কান্দাহার, জাবুল, পাকতিকা, খোস্ত, নাঙ্গারহার এবং কুনার প্রদেশে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর চৌকি লক্ষ্য করে হামলা চালায় আফগান বাহিনী। এই প্রদেশগুলো পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে অবস্থিত।
আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এনায়েতুল্লাহ খোয়ারাজমি বলেছেন, এটি পাকিস্তানের আফগান আকাশসীমা লঙ্ঘনের জবাবে পাল্টা অভিযান ছিল। তিনি বলেন, স্থানীয় সময় মধ্যরাতে আক্রমণটি শেষ হয়।

তিনি আরও বলেন, যদি প্রতিপক্ষ আবারও আফগানিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে, তাহলে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী আকাশসীমা রক্ষায় প্রস্তুত আছে এবং কঠোর জবাব দেবে।

এদিকে নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে রবিবার পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম পিটিভি জানিয়েছে, আফগানিস্তানের তালেবানের হামলার জবাবে দেশটির সীমান্তের ১৯টি আফগান সীমান্ত চৌকি দখল করেছে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী।

সূত্র আরও জানিয়েছে, চৌকিতে থাকা আফগান তালেবান নিহত হয়েছেন এবং বাকি সদস্যরা প্রাণ বাঁচাতে পালিয়েছেন। কিছু চৌকিতে আগুন লাগার ঘটনাও ঘটেছে।

রেডিও পাকিস্তান জানিয়েছে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তালেবানের মনোজবা ক্যাম্প ব্যাটালিয়ন সদর দফতর, জান্দুসার পোস্ট, তুর্কমেনজাই ক্যাম্প এবং খারচর দুর্গ সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগানিস্তানের দিক থেকে গোলাগুলির লক্ষ্য ছিল খাওয়ারিজ গঠনগুলোকে পাকিস্তানের সীমান্তে প্রবেশ করানো। তবে, সতর্ক ও প্রস্তুত পাকিস্তানি পোস্ট দ্রুত এবং জোরালো প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

৫৮ পাকিস্তানি সেনা হত্যার দাবি আফগানিস্তানের

Update Time : 09:31:05 am, Sunday, 12 October 2025

শনিবার রাতভর পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। আফগান কর্মকর্তাদের দাবি, রাজধানী কাবুলসহ দেশটির ভূখণ্ডে পাকিস্তানের বিমান হামলার পাল্টা জবাব দিয়েছে তালেবান বাহিনী। এই হামলায় পাকিস্তানের অন্তত ৫৮ সেনা নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছে।

রবিবার তালেবান সরকারের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ এক এক্স পোস্টে বলেন, আফগান বাহিনী বিপুল পরিমাণ পাকিস্তানি অস্ত্রও দখল করেছে। অভিযানে আফগান তালেবান বাহিনীরও ২০ জনের বেশি সদস্য নিহত বা আহত হয়েছে।

তবে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পাকিস্তান আফগান সরকারের এই দাবির বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।

এর আগে হেলমান্দ প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র মৌলভী মোহাম্মদ কাসিম রিয়াজ গণমাধ্যমকে বলেন, শনিবার রাতে বাহরামপুর জেলার ডুরান্ড লাইনের কাছে আফগান বাহিনীর পাল্টা অভিযানে ১৫ পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছেন। তিনি বলেন, অভিযানে তিনটি পাকিস্তানি সামরিক ফাঁড়ি দখল ও অস্ত্র-গোলাবারুদ জব্দ করেছে আফগান বাহিনী।
আফগানিস্তানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে এপির প্রতিবেদনে বলা হয়, পাল্টা হামলায় এক ডজনেরও বেশি পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে। তবে এ বিষয়ে ইসলামাবাদ এখনও কোনও মন্তব্য করেনি।

গত বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল ও পূর্বাঞ্চলীয় পাকতিকা প্রদেশে পাকিস্তানের বিমান হামলার অভিযোগ তুলে তালেবান সরকার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছিল।

ইসলামাবাদ বিমান হামলার অভিযোগ স্বীকারও করেনি, আবার অস্বীকারও করেনি। তবে কাবুলকে আহ্বান জানিয়েছে ‘পাকিস্তানবিরোধী সন্ত্রাসী সংগঠন’ তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানকে (টিটিপি) আশ্রয় দেওয়া বন্ধ করতে।

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের হামলার জবাবে শনিবার রাতে হেলমান্দ, কান্দাহার, জাবুল, পাকতিকা, খোস্ত, নাঙ্গারহার এবং কুনার প্রদেশে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর চৌকি লক্ষ্য করে হামলা চালায় আফগান বাহিনী। এই প্রদেশগুলো পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে অবস্থিত।
আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এনায়েতুল্লাহ খোয়ারাজমি বলেছেন, এটি পাকিস্তানের আফগান আকাশসীমা লঙ্ঘনের জবাবে পাল্টা অভিযান ছিল। তিনি বলেন, স্থানীয় সময় মধ্যরাতে আক্রমণটি শেষ হয়।

তিনি আরও বলেন, যদি প্রতিপক্ষ আবারও আফগানিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে, তাহলে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী আকাশসীমা রক্ষায় প্রস্তুত আছে এবং কঠোর জবাব দেবে।

এদিকে নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে রবিবার পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম পিটিভি জানিয়েছে, আফগানিস্তানের তালেবানের হামলার জবাবে দেশটির সীমান্তের ১৯টি আফগান সীমান্ত চৌকি দখল করেছে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী।

সূত্র আরও জানিয়েছে, চৌকিতে থাকা আফগান তালেবান নিহত হয়েছেন এবং বাকি সদস্যরা প্রাণ বাঁচাতে পালিয়েছেন। কিছু চৌকিতে আগুন লাগার ঘটনাও ঘটেছে।

রেডিও পাকিস্তান জানিয়েছে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তালেবানের মনোজবা ক্যাম্প ব্যাটালিয়ন সদর দফতর, জান্দুসার পোস্ট, তুর্কমেনজাই ক্যাম্প এবং খারচর দুর্গ সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগানিস্তানের দিক থেকে গোলাগুলির লক্ষ্য ছিল খাওয়ারিজ গঠনগুলোকে পাকিস্তানের সীমান্তে প্রবেশ করানো। তবে, সতর্ক ও প্রস্তুত পাকিস্তানি পোস্ট দ্রুত এবং জোরালো প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।